প্রকাশিত: Thu, Mar 2, 2023 3:15 PM
আপডেট: Thu, Jun 26, 2025 9:01 AM

আনকোয়ালিফাইড প্রার্থী নিয়োগ এবং বিমানের খরচ

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন : ডেইলি স্টার পত্রিকা আমাদের স্মার্ট বিমানের উপর একটি দারুণ আর্টিকেল ছেপেছে। গত বছর বিমান তার বোয়িং ৭৭৭ চালানোর জন্য পাইলট ঘাটতি মেটাতে জরুরি ভিত্তিতে চুক্তিভিত্তিক পাইলটদের একটি ব্যাচ নিয়োগ করেছিলো। একবছর পর দেখা গেলো ১৪ জনের পাইলটের ব্যাচের মধ্যে মাত্র পাঁচজনই সফল হয়েছে। বাকি ৯ জনের মধ্যে কারও ছিল জাল সার্টিফিকেট, কারো অযোগ্যতা এবং কারো লাইসেন্সিং পরীক্ষায় ব্যর্থতা। বোয়িং ৭৭৭ হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্যাসেঞ্জার বিমান আর সেটির পাইলট নিয়োগে যদি এই অবস্থা হয় তাহলে ভাবুন আমাদের বিমান কতো স্মার্ট লোকজনের হাতে। এই স্মার্ট বিমান কর্তৃপক্ষ কি করেছে জানেন? এরা আনকোয়ালিফাইড প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়ে বিমানের খরচে তাদের ট্রেনিং করিয়েছে। 

অথচ উচিত ছিলো কোয়ালিফাইড প্রার্থীদের পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করে নিয়োগ দেওয়া যেন তাদের পেছনে বিমানকে আর কোন খরচ করতে না হয়। বিমানের পাইলট হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা হলো প্রার্থীকে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হতে হবে। অথচ এই ১৪ জনের একজন ভুয়া বিজ্ঞানের সার্টিফিকেট দিয়ে বিমানের খরচে ট্রেনিং পেলো। সে আসলে আর্টসের ছাত্রী ছিলো। ইনি কে? তার নাম সাদিয়া এবং তিনি বিমানের চিফ অব ট্রেনিং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের স্ত্রী। ধরে নেওয়া যায় ১৪ জনের প্রায় প্রত্যেকেই হয় টাকা না হয় আত্মীয়তা কিংবা প্রভাবশালীদের প্রভাবে সুযোগ পেয়েছিলো। এইসব জানার পর মানুষ কেন জীবনের রিস্ক নিয়ে বিমানে চলবে? 

এই রিক্র্যুটমেন্ট প্রসেসে যারা ছিলেন তাদের সবাইকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা উচিত। এরা জাতির সঙ্গে বেঈমানি করেছে। বিমানের বিপুল টাকার অপচয় করিয়েছে এবং যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। এমনি এমনি কি আর বিমানের এই দূরবস্থা। আমরা যখন ছোট ছিলাম বিমান তখন অনেক ভালো ছিল। বিমানে যারা চাকরি করতো সমাজে তাদের সম্মান ছিলো। একই কথা আমাদের টেলিটকের, আমাদের রেলের, আমাদের সব কিছুর। সব কিছুই এখন স্মার্ট লোকজনের কবলে চলে গিয়েছে। লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়